শেয়ার মার্কেট: সহজ গণনার প্রক্রিয়া
১. মুনাফা/লস – কীভাবে গণনা করবেন?
একটি স্টকের মুনাফা বা ক্ষতি নির্ণয়ের সহজ সূত্র হলো:
মুনাফা/ক্ষতি (₹) = বিক্রয় মূল্য – ক্রয়ের মূল্য
যদি আপনি ১০০‑টি শেয়ার ₹১০০ প্রতি খরচে কিনে থাকেন এবং পরে ₹১২০‑তে বিক্রি করেন:
মুনাফা = (₹১২০ – ₹১০০) × ১০০ = ₹২০ × ১০০ = ₹২০০০
২. শতাংশে রিটার্ন (রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট)
মুনাফার পরিমাণ অধিক অর্থবহ হলে, শতাংশে রিটার্ন হিসেব করে তুলনা করা ভালো:
রিটার্ন (%) = (বিক্রয় – ক্রয়) ÷ ক্রয় × ১০০
উপরের উদাহরণে:
(₹২০ ÷ ₹১০০) × ১০০ = ২০ % মুনাফা
৩. কমিশন ও চার্জ অন্তর্ভুক্ত রাখা
ব্রোকারের কমিশন ও ট্রানজ্যাকশন ফি মুনাফা কমিয়ে দেয়, তাই:
নিট মুনাফা = (বিক্রয় – ক্রয়) – কমিশন
মান নেওয়া যাক: কমিশন ₹১০০; তাহলে নিট মুনাফা = ₹২০০০ – ₹১০০ = ₹১৯০০ (প্রতি করে %)
৪. উদাহরণ: বিস্তারিত সংখ্যা বিশ্লেষণ
ধরুন:
ক্রয় মূল্য = ₹৫০০ প্রতি শেয়ার,
শেয়ার সংখ্যা = ৫০,
বিক্রয় মূল্য = ₹৬০০,
কমিশন = ₹৫০।
তাহলে,
- মোট বিনিয়োগ = ₹৫০০ × ৫০ = ₹২৫,০০০
- মোট বিক্রয় আয় = ₹৬০০ × ৫০ = ₹৩০,০০০
- গ্রস মুনাফা = ₹৩০,০০০ – ₹২৫,০০০ = ₹৫,০০০
- নিট মুনাফা = ₹৫,০০০ – ₹৫০ = ₹৪,৯৫০
- রিটার্ন (%) = (₹৪,৯৫০ ÷ ₹২৫,০০০) × ১০০ ≈ ১৯.৮ %
৫. “অ্যানুয়ালাইজড” রিটার্নে ডাবল চেক করুন (বছর ভিত্তিক)
দীর্ঘমেয়াদে যদি ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করেন, তাহলে বার্ষিক রিটার্ন নির্ণয়ের জন্য সময় ফ্যাক্টর যোগ করতে হবে; যেমন: ২০ % বার্ষিক রিটার্ন = (১ + ০.২০)^(মাস/১২) – ১ সূত্র ব্যবহার করে হিসেব করা যায়।
🔍 উপসংহার
শেয়ার ইনভেস্টমেন্টে সফলতা পেতে হলে নিয়মিতভাবে মুনাফা ও ক্ষতি গণনা করা প্রয়োজন — মূল৬ সূত্র হলো:
- ক্রয় ও বিক্রয় মূল্যের পার্থক্য
- শেয়ার সংখ্যা দিয়ে গুন করে মোট মুনাফা
- কমিশন ও ফি বিয়োগ
- শতাংশে রিটার্ন
- বার্ষিকী রিটার্ন (যদি প্রযোজ্য হয়)
- সুযোগে-সময়ে রিভিউ ও রিব্যাল্যান্স
এই সহজ ক্যালকুলেশনগুলো আপনাকে আপনার বিনিয়োগের কার্যকারিতা বুঝতে সহায়তা করবে। এছাড়াও বিভিন্ন স্প্রেডশীট বা অনলাইন ক্যালকুলেটরও ব্যবহার করতে পারেন
শেয়ার কেনার আগে যা যা মনে রাখা উচিত
১. কোম্পানির মৌলিক অবস্থা (Fundamentals)
– কোম্পানির আয়, মুনাফা, ঋণের পরিমাণ ও ROE-এর মতো সূচক দেখুন।
– দীর্ঘমেয়াদে লাভজনকতা ধরে রাখতে পারছে কিনা বিবেচনা করুন।
২. সেক্টর ও শিল্প পরিবেশ
– কোম্পানি কোন সেক্টরে কাজ করছে?
– সেক্টরের উন্নয়নশীলতা ও আইন-কানুন কীভাবে প্রভাব ফেলবে?
৩. ভ্যালুয়েশন (PE, PB, PEG)
– PE রেশিও তুলনা করুন সেক্টর ও কোম্পানির অন্যান্যদের সাথে।
– অতিমূল্যায়িত স্টক থেকে বিরত থাকুন।
৪. ঋণ ও দায় (Debt)
– উচ্চ ঋণ ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
– Interest Coverage Ratio বিশ্লেষণ করুন।
৫. বিনিয়োগের সময়কাল
– ট্রেডিং না ইনভেস্টমেন্ট?
– ছোট (১–৩ মাস), মাঝারি (৬–১২ মাস) বা দীর্ঘ (২+ বছর) প্ল্যান নির্ধারণ করুন।
৬. টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ (যদি ট্রেড করেন)
– চার্ট প্যাটার্ন (RSI, MACD, MA) দেখে উজ্জীবন বা বিপরীতে চিহ্নিত করুন।
৭. ডিভিডেন্ড রিটার্ন
– কোন কোম্পানি নিয়মিত ডিভিডেন্ড দেয়?
– ইনকাম ইচ্ছুক হলে ডিভিডেন্ড রিচ স্টক বিবেচনা করুন।
৮. সংবাদ ও বিশ্বপ্রভাব
– নতুন পিযার্টিসিপেশন, আইন পরিবর্তন, বা বিশ্ব অর্থনৈতিক ঘটনা নজরে রাখুন।
৯. ঝুঁকি ও ডাইভার্সিফিকেশন
– সব টাকা এক জায়গায় বিনিয়োগ করবেন না।
– সেক্টর, কোম্পানি সাইজ ও টাইপ অনুযায়ী পোর্টফোলিও গঠন করুন।
উপসংহার
শেয়ার কেনার সময়ে ৯টি মূল দিক স্পষ্ট ভাবে বিবেচনা করুন, যেমন: ফান্ডামেন্টাল, ভ্যালুয়েশন, ঋণ, টেকনিক্যাল ইত্যাদি। এগুলো মিলে তৈরি হবে একটি সচেতন ও ঝুঁকি-সংযত বিনিয়োগ।